সূর্য গ্রহণ সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?

সূর্যগ্রহণের সময় ছবি।


ওয়েস্টার্ন ডেটা সায়েন্স: পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত মহান আল্লাহতায়ালার অস্তিস্তের জানান দেয় এমন সৃষ্টির মধ্যে অন্যতম দুটি হলো সূর্য ও চন্দ্র। চন্দ্র-সূর্য থেকে মানুষ বিভিন্নভাবে উপকৃত হয়। সূর্যের আলোতে যেমন মানুষ উপকৃত হয়। তেমনি চাঁদের স্নিগ্ধ আলো মানুষকে মুগ্ধ করে। আল্লাহতায়ালা কর্তৃক নির্ধারিত একটি প্রক্রিয়া চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণ। চাঁদ যখন পরিভ্রমণ অবস্থায় কিছুক্ষণের জন্য পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে এসে পড়ে তখন পৃথিবীর কোনো দর্শকের কাছে কিছু সময়ের জন্য সূর্য আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য হয়ে যায়।

সূর্যগ্রহণ নিয়ে যা বলেছেন মহানবী (সা)

সূর্য ও চন্দ্র যখন গ্রহণের সময় হয় তখন আমাদের নবীর সা. চেহারা ভয়ে বিবর্ণ হয়ে যেত। তখন তিনি সাহাবিদের নিয়ে জামাতে নামাজ পড়তেন। কান্নাকাটি করতেন। আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতেন।নবীজি (সা.) বলেছেন যে, যখন তোমরা সূর্যগ্রহণ দেখবে তখনই আতঙ্কিত হৃদয়ে আল্লাহতায়ালার জিকির ও ইস্তিগফারে মশগুল হবে। (সহিহ মুসলিম : ১৯৮৯)

আরও পড়ুন: মঙ্গলে সন্ধান দেড় লক্ষ টন জল, প্রাণের সন্ধান মিলবে? নতুন গবেষণা ঘিরে শোরগোল

হাদিসে বলা আছে যে, হজরত আবু বকর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে ছিলাম এ সময় সূর্যগ্রহণ শুরু হয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন ওঠে দাঁড়ালেন এবং নিজের চাদর টানতে টানতে মসজিদে প্রবেশ করলেন এবং আমরাও প্রবেশ করলাম। তিনি আমাদের নিয়ে সূর্য প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত দু’রাকত নামাজ আদায় করলেন। এরপর তিনি বললেন, কারও মৃত্যুর কারণে কখনো সূর্যগ্রহণ কিংবা চন্দ্রগ্রহণ হয় না। তোমরা যখন সূর্যগ্রহণ দেখবে তখন এ অবস্থা কেটে যাওয়া পর্যন্ত নামাজ আদায় করবে এবং দোয়া করতে থাকবে। (বুখারি, ৯৮৩)

আরও পড়ুন: গত ৫০ বছরের এত তীব্র সৌরঝড়, আগুনের ঝাপটা এল পৃথিবীর দিকেও, ছবি তুলল আদিত্য-এল১

পবিত্র কোরআনে গুরুত্বের সঙ্গে স্থান পেয়েছে সূর্য ও চন্দ্র প্রসঙ্গ। পবিত্র কোরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে, তিনিই সত্তা যিনি সূর্যকে কিরণোজ্জ্বল ও চাঁদকে স্নিগ্ধ আলোয় আলোকিত করেছেন। (সুরা ইউনুস : ৫) অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, আর আমি সৃষ্টি করেছি একটি প্রজ্বলিত বাতি। (সুরা : নাবা ১৩) পবিত্র কোরআন আরও বলা হয়েছে , আল্লাহ চাঁদকে স্থাপন করেছেন আলোরূপে, আর সূর্যকে স্থাপন করেছেন প্রদীপরূপে। (সুরা : নুহ ১৬)

আর তিনিই তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন রাত, দিন, সূর্য ও চাঁদকে এবং নক্ষত্ররাজিও তারই নির্দেশে নিয়োজিত। নিশ্চয়ই এতে বোধশক্তি সম্পন্ন সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে অনেক নিদর্শন। (সুরা নাহল ১৬)

অতএব, সূর্যগ্রহণের সময় একে আনন্দ-উপভোগের উপলক্ষ মনে না করে আল্লাহর ইবাদতে লিপ্ত হওয়া উচিত। কারণ এ সময়কে আল্লাহর নবী আশঙ্কার মুহূর্ত মনে করতেন। তাই সূর্যগ্রহণ শেষ হওয়া পর্যন্ত সালাতুল কুসুফ’ পড়া সুন্নাত। সূর্যগ্রহণ শেষ হওয়ার আগে নামাজ শেষ করলেও কোনো সমস্যা নেই। তবে সূর্যগ্রহণ চলাকালীন বাকি সময়টুকুতে জিকির, দোয়া, তওবা-ইসতেগফা, দান-সদকার মাধ্যমে কাটানো উত্তম।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url