ফজরের পর ঘুমালে কি কি ক্ষতি হয় আজকে তা জানুন

ফজরের পর ঘুমালে কি কি ক্ষতি হয় আজকে তা জানুন
 ঘুমানোর ছবি।


ওয়েস্টার্ন ডেটা সায়েন্স: মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে কাজের জন্য। মানুষের মূল কাজ পরকালের সম্পদ জমা করা। পরকালের সম্পদ জমা করার জন্য প্রয়োজন পার্থিব জীবনেও জীবিকার জোগান। আর এ জন্যই মানুষ দিনভর দৌড়ঝাঁপ করে জীবিকার সন্ধানে। দিনভর কর্ম-ক্লান্তির পর রাতের নীরবতায় আল্লাহ মানুষের জন্য ঘুমের আয়োজন করেছেন। 

সকালে ঘুমালে কি কি ক্ষতি হয়

শুধু শরীরের প্রয়োজন ছাড়াও হাজারো উপকারিতা রয়েছে ঘুমে। ঘুম মানুষের চিন্তা পেরেশানি দূর করে অন্তর ও মস্তিষ্ককে এমনভাবে স্বস্তি ও শান্তি প্রদান করে যার বিকল্প পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই। সারা দিনের ক্লান্তি-শ্রান্তিতে বিপর্যস্ত হয়ে রাতে ঘুমানোর মাধ্যমে আবার উদ্যমতা ফিরে আসে। ঘুম থেকে জেগে নতুন উদ্যমে নতুন দিন শুরু করা যায়।মানুষ দিনে কাজ করবে, পরিশ্রম করবে, ঘাম ঝরাবে এবং রাতে বিশ্রাম নেবে, ঘুমাবে-এটাই প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম।

আল্লাহ এতে মানুষের মনের প্রশান্তি ও শরীরের সুস্থতা রেখেছেন। এর বিপরীত করলে ব্যক্তিজীবনে বিপর্যয় ঘটতে পারে। বিশেষ করে ফজরের পর ও আসরের পর ঘুমানো খুবই ক্ষতিকর। এর ফলে শরীরে নানা রোগের উপসর্গ সৃষ্টি হয়।  

মহান আল্লাহ বলেন, আমি তোমাদের ঘুমকে করেছি বিশ্রাম, রাতকে করেছি আবরণ।’ (সুরা নাবা : ৯-১০)

কিছু মানুষ অহেতুক সময় নষ্ট করে রাতে দেরি করে ঘুমান। কোনো কাজ না থাকার পরও দেখা যায় অযথা রাত জাগরণ করছেন। বিছানায় গা এলিয়ে দেওয়ার পরও মোবাইল স্ক্রল করতে করতে দুই/তিন ঘণ্টা বেহুদা নষ্ট করে যাচ্ছে। কিন্তু ইসলামের কথা হলোঃ নির্দেশনা হচ্ছে রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য উঠে পড়া। এশার নামাজ আদায়ের পর আর কোনো কাজ না করে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়া। 

নবীজি (সা.)-এর সারা জীবনের আমল। তিনি সন্ধ্যায় ঘুমানো এবং এশার নামাজের পর না ঘুমিয়ে গল্প-আড্ডা দেওয়া পছন্দ করতেন না। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) এশার নামাজের আগে ঘুমাননি এবং তারপর নৈশ আলাপ করেননি। (ইবনে মাজা : ৭০২)

আরও পড়ুন: সূর্য গ্রহণ সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?

ফজরের নামাজের পর সকালের ঘুম জীবন-জীবিকার বরকত নষ্ট করে দেয়। দিনের শুরুটা ঘুমে কেটে যাওয়ার ফলে দিন সংকীর্ণ হয়ে যায়। কাজের সময় ও পরিধি কমে যায়। পক্ষান্তরে ফজরের নামাজ আদায়, কুরআন তেলাওয়াত এবং ইশরাক নামাজ আদায়ের মাধ্যমে দিনের কার্যক্রম শুরু করতে মহান আল্লাহ সারা দিনের জন্য বান্দার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ফলে দিনটি হয়ে ওঠে বরকতময়। 

আরও পড়ুন: পৃথিবীর জমজ গ্রহ কোনটি, কাকে বলে ও কেন?

সাখর আল-গামিদী (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, হে আল্লাহ! আপনি আমার উম্মতকে ভোরের বরকত দান করুন।তিনি কোনো ক্ষুদ্র বা বিশাল বাহিনীকে কোথাও প্রেরণ করলে দিনের প্রথমভাগেই প্রেরণ করতেন। বর্ণনাকারী সাখর (রা.) একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি তার পণ্যদ্রব্য দিনের প্রথমভাগে পাঠানোর ফলে অনেক সম্পদের অধিকারী হয়েছিলেন। (আবু দাউদ : ২৬০৮)

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ভেতর ফজরের সবচেয়ে কমসংখ্যক মুসল্লি মসজিদে উপস্থিত হয়ে থাকে। যার অন্যতম কারণ রাতে দেরি করে ঘুমানো এবং সকালে দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা। সকালের স্নিগ্ধ বাতাসে শরীর ও মন প্রফুল্ল হয়। আর একজন ঘুমন্ত ব্যক্তি কখনো এই নেয়ামত উপভোগ করতে পারে না।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url