রহস্যময় আদিম এক ধূমকেতু! যা খা্লি চোখে দেখা যাবে ৫০ হাজার বছর পর পৃথিবী থেকে
আদিম এক ধূমকেতু ৫০ হাজার বছর পর ছবি। |
ওয়েস্টার্ন ডেটা সায়েন্স: মাঝে কেটে গিয়েছে প্রায় ৫০ হাজার বছর। আবার সে ফিরে আসছে। যেন সেলিব্রিটি ধূমকেতু । আবারও নীল গ্রহের দুয়ারে দেখা দেবে এক পুরোনো অতিথি। ৫০ হাজার বছর পর দেখা যাবে একটি বিরল ধূমকেতু। কোনও যন্ত্রের সাহায্য ছাড়াই তা পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন বিশ্ববাসী।
ধূমকেতু ৫০ হাজার বছর পর দেখা যাবে পৃথিবী থেকে
মহাকাশবিজ্ঞানীরা বলছেন যে, যদি আকাশ পরিষ্কার থাকে এবং চাঁদের আলো বেশি না হয় তবেই ওই বিশালকার ধাবমান ধূমকেতু খালি চোখে দেখা সম্ভব। শেষ যখন দেখা গিয়েছিল সেই সময় হয়তো আদিম মানুষ নিয়ান্ডারথাল পৃথিবীতে বিচরণ করত। সেখানে হাতির পরিবর্তে ম্যামথ ঘুরত। তখন কোনও দূষণ ছিল না। আকাশ পরিষ্কার থাকত। পূর্বপুরুষরা হয়তো এই ধূমকেতু দেখেছেন। ভাগ্য ভালো যে এই সময়ের মধ্যে এটি পৃথিবীর পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: প্রতি ঘণ্টায় ১২০ টি উল্কাপিণ্ড পড়বে পৃথিবীতে এই ডিসেম্বরে, এর নাম জেমিনিড আপনিও দেখতে পাবেন?
গত বছর মার্চে সৌরমণ্ডলের কাছাকাছি দেখা গিয়েছিল এই ধূমকেতুকে। ওয়াইড ফিল্ড সার্ভে ক্যামেরায় সেটিকে দেখেছিলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। তখনই বোঝা গিয়েছিল যে, ফের এত বছর পৃথিবীর সঙ্গে দেখা করতে আসছে সেই ধূমকেতু। ইতিমধ্যেই এই ধূমকেতুটির গঠন নিয়ে বিভিন্ন গবেষণায় ব্যস্ত রয়েছেন বিজ্ঞানীরা।প্যারিস অবজার্ভেটরির এক বিজ্ঞানী নিকোলাস বিভার বলেছেন যে, বরফ এবং ধুলো দিয়ে তৈরি ধূমকেতুটি সবুজ আভা সৃষ্টি করবে। ব্যাস প্রায় এক কিলোমিটার। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এটি পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে যাবে। তাই ধূমকেতুটি বেশি উজ্জ্বলতর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানিয়েছে যে, জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই ধূমকেতুটি গত বছর মার্চ মাসের ২ তারিখে জুইকি ট্রানজিয়েন্ট ফ্যাসিলিটিতে ওয়াইড ফিল্ড সার্ভে ক্যামেরার মাধ্যমে দেখেছিলেন। ধূমকেতুটির নাম দেওয়া হয়েছে C/2022 E3 (ZTF)। সেই সময় এটি বৃহস্পতির কক্ষপথে ছিল এবং তারপর থেকে এটির উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ধূমকেতুটি ১২ জানুয়ারি সূর্যের সবথেকে কাছে আসবে। এরপর ২ ফেব্রুয়ারি পৃথিবীর সবথেকে কাছাকাছি আসবে। যদিও ধূমকেতুর উজ্জ্বলতা এখনও অস্পষ্ট।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১ কোন ধরনের কৃত্রিম উপগ্রহ
নাসা আরও বলেছে যে, যতদিন যাবে তা স্পষ্ট হবে এবং তা খালি চোখে দৃশ্যমান হতে পারে অন্ধকার রাতের আকাশে। তবে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের দাবি পৃথিবীতে কোনও বিপদের সম্ভাবনা নেই। কারণ এটি পৃথিবী থেকে প্রায় ৪ কোটি ২৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে থাকবে। নিকোলাস আরও বলছেন যে, ধূমকেতুটি এবার পৃথিবীকে অতিক্রমের পর পুরোপুরি সৌরজগতের বাইরে চলে যাবে। সেটি আর ফিরবে না।এটি একটি খুব উজ্জ্বল ধূমকেতু তাই খালি চোখেই দেখা যাবে। নাসার রিপোর্ট বলছে, তারা এখনও পর্যন্ত ৩৭৪৩টি ধূমকেতুর সন্ধান পেয়েছে। সাধারণত ধূমকেতুর আসা যাওয়া কিংবা ঔজ্জ্বল্য নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা যায় না। অনেক সময়ই ধূমকেতুরা তাদের দিক পরিবর্তন করে।