চাঁদে জমি কি কেনা যায়? মহাকাশের আইন কী বলছে?
চাঁদের জমির ছবি। |
ওয়েস্টার্ন ডেটা সায়েন্স: নক্ষত্র হিসেবে সূর্যকে বাদ দিলে পৃথিবী থেকে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান মহাকাশের উপগ্রহ হল চাঁদ। সেই চাঁদে এখনও পর্যন্ত পতাকা উত্তোলন করে আসতে পেরেছে বিশ্বের মাত্র দুটি দেশ। একটি চিন এবং অপরটি আমেরিকা। কিন্তু পতাকা রেখে আসা মানেই কি চাঁদ সে দেশের হয়ে গেল! ওই দুই দেশের পতাকা উড়ছে মানেই কি চাঁদকে তাদের সম্পত্তি মনে করতে পারে? তাদের দুই দেশেরই কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বললে জানাযায় যে, চাঁদকে নিজেদের দেশের সম্পত্তি বলে মনে করেন না ।
চাঁদে যদি কারও জমি থাকে তাহলেই কি তার মালিকানার দাবিদার হতে পারবে?
১৯৫৭ সালের অক্টোবরে সোভিয়েত ইউনিয়ন বিশ্বের প্রথম স্যাটেলাইট স্পুটনিক-১ উৎক্ষেপণ করেছিল। সেই উৎক্ষেপণই মহাকাশে সম্ভাবনার একটি নতুন দিগন্তের উন্মোচন করেছিল। তবে সেই সম্ভাবনার কিছুটা অংশ জুড়ে যদি বৈজ্ঞানিক দিক থেকে থাকে বাকি অংশটা জুড়ে ছিল আইনি জটিলতা। তার প্রায় এক দশক পরে গ্লোবাল কমিউনিটি মহাকাশ সংক্রান্ত প্রথম আইনি দলিল আউটার স্পেস চুক্তির খসড়া তৈরি করে।
সেই চুক্তিই আজ মহাকাশ আইনের সবচেয়ে প্রভাবশালী অংশ হিসেবে রয়ে গিয়েছে। কিন্তু তা কার্যকর করা কার্যত অসম্ভব হয়ে গিয়েছে বছরের পর বছর ধরে। ইউনিভার্সিটি অফ মিসিসিপি স্কুল অফ লএর মহাকাশ আইন বিশেষজ্ঞ মিশেল হ্যানলনের কথায় এগুলি শুধুই নির্দেশিকা এবং নীতি ছাড়া আর কিছুই নয়।হ্যানলন বলছেন যে, মহাকাশ চুক্তিতে সেখানে জমি দখলের বিষয়টি স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা আছে।
চুক্তির দুই নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনও দেশ মহাকাশ বা মহাকাশীয় বস্তুর কোনও অংশের দখল ঘোষণা করতে পারে না। পাশাপাশি কোনও দেশ চাঁদের সার্বভৌমত্বও দাবি করতে পারে না বলেও যোগ করলেন তিনি। কিন্তু যখনই চাঁদে জমি কেনা বা ঘাঁটি গেড়ে বসার বিষয়টি উত্থাপিত হয়। তখনই তা অস্পষ্ট হিসেবে ধরা দেয়। হ্যানলনের কথায় এই যে, ঘাঁটি এক ধরনের অঞ্চল ক্যাপচার করার মতো বিষয়।
আরও পড়ুন: বর্তমানে বামন গ্রহের সংখ্যা কয়টি?
এদিকে আবার চুক্তির তিন নম্বর অনুচ্ছেন অনুসারে যে, কোনও ব্যক্তির মহাকাশে সম্পত্তির মালিক হওয়ার মৌলিক অধিকার রয়েছে। যে কেউ চাঁদে বাড়ি তৈরি করে নিজেদের বলে দাবি করতে পারে। অনেক মানুষ চাঁদের অংশের মালিক বলে দাবি করেছেন।তবে ওই আইনের বারো নম্বর ধারা এই ধরনের যে কোনও প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করতে পারে।
আরও পড়ুন: চাঁদের চারপাশে ঘূরে বাড়ি ফিরছে Orion, কোথায় ছিটকে পড়ে আর কখন
সেখানে পরিষ্কার ভাবে বলা হয়েছে যে, অন্য কোনও মহাকাশীয় বস্তুতে যে কোনও ধরনের ইনস্টলেশন সকলের ব্যবহার করা উচিত। এর পাশাপাশি কোনও বাণিজ্যিক বা স্বাধীন ইউনিটকে স্বাধীন না ভেবে সে দেশের অন্তর্গত বলেই বিবেচিত হবে। উল্লেখ করা হয়েছে মহাকাশ চুক্তির ১২ নম্বর ধারায়।