সৌরপৃষ্ঠে বিরাট সাপ! ৩৮০,০০০ মাইল প্রতি ঘণ্টা বেগে চলাফেরা করছে
সৌরপৃষ্ঠে বিরাট সাপ ছবি। |
ওয়েস্টার্ন ডেটা সায়েন্স: সূর্যের পৃষ্ঠে যদি একটা সাপ চলাফেরা করে কেমন লাগে। গত ৫ সেপ্টেম্বর ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির সোলার অরবিটার তেমনই একটা ছবি তুলে এনেছে। যা দেখে আপনার মনে হবে যেন সৌরপৃষ্ঠে একটা সাপ চলাফেরা করছে। সাপ এখানে সত্যিকারের সাপ নয়, এখানে সাপ অপেক্ষাকৃত শীতল বায়ুমণ্ডলীয় গ্যাসের একটি টিউব। যা সূর্যের চৌম্বক ক্ষেত্রের একটি দীর্ঘ ফিলামেন্ট বরাবর অনুসরণ করে।
সত্যি কি সৌরপৃষ্ঠে বিরাট সাপ দেখা গেল
এই শীতল প্লাজ়মা টিউবটি আশপাশের গরম প্লাজ়মার চৌম্বকীয় ক্ষেত্রগুলিতে স্থগিত ছিল। প্লাজ়মা গ্যাসকে এমন পরিমাণে উত্তপ্ত করা হয় যে, গ্যাসের পরমাণুর ইলেকট্রনগুলি হারিয়ে যায়।এই ইলেকট্রনগুলি পরমাণুকে বৈদ্যুতিক চার্জ দেয়। যার ফলে তারা চৌম্বকক্ষেত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে। যেহেতু সূর্যের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ১,০০০,০০০ °C এর বেশি তাই সৌর বায়ুমণ্ডলের সমস্ত গ্যাস আসলে প্লাজ়মাই।
সৌর অরবিটার মহাকাশযান দ্বারা সূর্যের উপর যে বৈশিষ্ট্যগুলি দেখা গিয়েছে তা থেকে ওই সাপ তথা টিউবটি সম্পর্কে একাধিক তথ্য মিলেছে। এটি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ সাপটি একটি বড় অগ্ন্যুৎপাতের পূর্বসূরী ছিল। প্লাজ়মা চৌম্বক ক্ষেত্রের একটি বড় ফিলামেন্ট অনুসরণ করে। যা সূর্যের এক পাশ থেকে অন্য দিকে পৌঁছয়। এদিকে ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জানা গিয়েছে। এই সোলার স্নেকের সৌরপৃষ্ঠ পার করেছে ১৭০ কিলোমিটার প্রতি সেকেন্ড বা ৩৮০,০০০ মাইল প্রতি ঘণ্টা বেগে তার জন্য সময় লেগেছে তিন ঘণ্টা।
আরও পড়ুন: পৃথিবী সহ তিন গ্রহকে গিলে খেতে আসছে সূর্য! ধ্বংসের বার্তা দিলেন বিজ্ঞানীরা
ওই অঞ্চল জুড়ে সাপটি ভ্রমণ করতে প্রায় তিন ঘণ্টা সময় নিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। ঘটনাটির প্রধান তদন্তকারী ডেভিড লং বলেছেন যে, আপনি একপাশ থেকে অন্য দিকে প্লাজ়মা প্রবাহিত করছেন। কিন্তু চৌম্বক ক্ষেত্রটি সত্যিই বাঁকানো হয়েছে। তাই আপনি এই পরিবর্তনটি চাক্ষুষ করতে পারছেন। কারণ আপনি ওই বেঁকে যাওয়া কাঠামোটির দিকে তাকিয়ে আছেন।যে অঞ্চলে ওই সাপটিকে দেখা গিয়েছিল সেখানে একটি করোনাল মাস ইজেকশন তৈরি হয়েছিল।
আরও পড়ুন: চাঁদে যাচ্ছে মানুষ! নাসার আর্টেমিস ১ এর সফল উৎক্ষেপণ হল
পাশাপাশি সেখানে অগ্ন্যুৎপাতের সময় সূর্য থেকে নির্গত সবচেয়ে তীব্র উচ্চ শক্তির কণাগুলিকেও রেজিস্টার করেছিল সৌর অরবিটারটি। শুধু তাই নয় অগ্ন্যুৎপাত থেকে প্লাজমার প্রবাহও রেজিস্টার করেছিল নাসার পার্কার সোলার প্রোব। এই পরিমাপের সংমিশ্রণ অগ্নুৎপাতের বিষয়বস্তু সম্পর্কে তদন্তে গবেষকদের সাহায্য করবে। তার ফলে হেলিওফিজিক্সে দ্বারোদঘাটন ঘটবে এবং সেই সঙ্গেই যে প্রক্রিয়াগুলি মহাকাশের আবহাওয়াকে চালিত করে। সেই সব কিছু নিয়েই একটা ধারণা তৈরি হবে।