নতুন এক উল্কা আতঙ্ক বাড়াচ্ছে পৃথিবীর

নতুন এক উল্কা আতঙ্ক বাড়াচ্ছে পৃথিবীর
এপি৭ উল্কা।


ওয়েস্টার্ন ডেটা সায়েন্স: সূর্যের দৃষ্টি আচ্ছন্নকারী রশ্মির জাল ভেদ করে সম্প্রতি ২০২২ এপি৭ নামে এক বড় মাপের উল্কার অস্তিত্ব উন্মোচনের খবর ঘোষণা করল আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দল। যদিও এই সাফল্যের আনন্দকে ছাপিয়ে এখন এক অজানা আশঙ্কার মেঘ ঘুরপাক খাচ্ছে বিজ্ঞানীদের মনে। কারণ পৃথিবীর কক্ষপথকে ক্রস বা অতিক্রম করছে এই উল্কাটির কক্ষপথ। 

নতুন এক উল্কা

যার জেরে ভবিষ্যতে পৃথিবীর সঙ্গে উল্কাটির সংঘর্ষ ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। যদিও তা শুধু আশঙ্কামাত্র বলেই জানান বিজ্ঞানীরা। যদি তেমনটা হয়েও, তা সুদূর ভবিষ্যতের গর্ভে বলেই আশ্বস্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। পৃথিবীর বর্তমান বাসিন্দাদের এই নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ খুব একটা নেই।সূর্যের রশ্মির তেজ অতিক্রম করে যে কোনও রকমের গবেষণামূলক কাজ চালানো বিজ্ঞানীদের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। 

সেই প্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে প্রায় ১.৫ কিলোমিটার চওড়া ২০২২ এপি৭ নামে এই উল্কাটির খোঁজ পাওয়া নিঃসন্দেহে মহাকাশ বিজ্ঞানীদের কাছে এক বড় সাফল্য। ডার্ক ম্যাটার’ পর্যালোচনার জন্য চিলিতে রয়েছে ভিক্টর এম ব্লাঙ্কো নামে টেলিস্কোপ। সেটির সঙ্গে একটি শক্তিশালী প্রযুক্তির যন্ত্র জুড়ে চলে এই অনুসন্ধান পর্ব। ২০২২ এপি৭-এর পাশাপাশি আরও দু’টি উল্কারও সন্ধান পাওয়া গিয়েছে একই সঙ্গে। 

সে দু’টিও পৃথিবীর নিকটবর্তী অঞ্চলের বাসিন্দা। যার মধ্যে একটি এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত হওয়া সূর্যের সবচেয়ে কাছের উল্কা বলে জানানো হয়েছে। তবে পৃথিবীর জন্য অন্তত এই দু’টির কোনওটিই ক্ষতিকর নয় বলে জানানো হয়েছে। আতঙ্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ২০২২ এপি৭।এই গবেষণাটি নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে দ্য অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল জার্নাল এ। রিপোর্টের বলা হয়েছে যে, কার্নেগি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এর স্কট শেফার্ডের বক্তব্য ২০২২ এপি৭ পৃথিবীর কক্ষপথের উপর দিয়ে যাবে। 

উল্কা কেন পৃথিবীর জন্য ভয়ের কারন

যে কারণে পৃথিবীর কাছে তা শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে বর্তমানে বা ভবিষ্যতে পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটার মতো এই উল্কার গতিপথে বদলের পরিস্থিতি তৈরি হবে কি না তা নিয়ে স্পষ্ট প্রমাণ মেলেনি। তবে মহাকাশে প্রদক্ষিণরত আর পাঁচটা বস্তুর মতো ভবিষ্যতে বিভিন্ন গ্রহের মাধ্যাকর্ষণের প্রভাবে তার গতিপথে বদল আসা অস্বাভাবিক কিছু নয়। ফলে আগামী সময়ে কী হতে পারে তা নিয়ে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।

আরও পড়ুন: গ্রহাণুকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিতে সক্ষম ডার্ট! পৃথিবীকে বাঁচাতে নাসার এই মহাকাশযান

গত আট বছরে আবিষ্কার হওয়া মহাকাশীয় বস্তুগুলির মধ্যে ২০২২ এপি৭ সবচেয়ে বড় মাপের তো বটেই পৃথিবীর জন্য সম্ভবত সবচেয়ে ক্ষতিকরও এমনটাই মত বিজ্ঞানীদের।বর্তমান কক্ষপথের ধারা অনুযায়ী সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে পাঁচ বছর লাগে এই উল্কার। বর্তমান পরিস্থিতিতে পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে এলেও তার থেকে এই উল্কার দূরত্ব থাকবে বেশ কয়েক লক্ষ কিলোমিটার। 

আরও পড়ুন: পৃথিবীর ওজোন স্তরের ছিদ্র ক্রমশ কমছে, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সুখবর শোনাল নাসা

ফলে ভয়ের তেমন কোনও কারণ নেই। কিন্তু যদি কোনও কারণে পৃথিবীর সঙ্গে উল্কাটির ধাক্কা লাগে তা হলে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে যে ধুলো ছড়িয়ে পড়বে তার প্রভাবে বিলুপ্তির পথে এগিয়ে যেতে পারে একাধিক প্রজাতি। যদিও আগামী শতাধিক বছরের মধ্যে তেমন ঘটনা ঘটার আভাস নেই বলেই আশ্বাস দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url