সূর্যের থেকে ৫৩০ গুণ বড় নক্ষত্রটি বিস্ফোরণ, দেখাল ১১ বিলিয়ন বছর পিছিয়ে গিয়ে হাবল টেলিস্কোপ

সূর্যের থেকে ৫৩০ গুণ বড় নক্ষত্রটি বিস্ফোরণ, দেখাল ১১ বিলিয়ন বছর পিছিয়ে গিয়ে হাবল টেলিস্কোপ
৫৩০ গুণ বড় নক্ষত্রটি বিস্ফোরণ ।


ওয়েস্টার্ন ডেটা সায়েন্স: অনন্য নজির সৃষ্টি করল নাসার হাবল স্পেস টেলিস্কোপ। দূর দূরান্তের সুপারনোভার বিভিন্ন মুহূর্ত ফ্রেমবন্দি করেছে স্পেস টেলিস্কোপটি। মহাবিশ্ব তখন তার শৈশবে। ১১ বিলিয়ন বছর আগে বিরাট তারার বিস্ফোরণ হয়। এখন টেলিস্কোপটি সেই ১১ বিলিয়ন বছরে পিছিয়ে গিয়ে ওই বিরাট তারার বিস্ফোরণ অর্থাৎ সুপারনোভা অবস্থার আগের মুহূর্তের ছবি তুলে এনেছে। 

১১ বিলিয়ন বছর পিছিয়ে গিয়ে হাবল টেলিস্কোপ কি দেখাল

নক্ষত্রটি আমাদের সূর্যের চেয়ে ৫৩০ গুণ বড় ছিল। একটি বিপর্যয়কর বিস্ফোরণে তার বাইরের গ্যাসের স্তরগুলিকে আশপাশের মহাজাগতিকতায় উড়িয়ে দিয়েছিল। এই ঘটনাটিকেই সুপারনোভা বলা হয়। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা শক্তিশালী স্পেস অবজ়ারভেটরি ব্যবহার করে বিস্ফোরণের নক্ষত্রটির চূর্ণ বিচূর্ণ হওয়া অবস্থার ছবি তুলে ধরেছে।

একটি সুপারনোভা খুব প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করা যেতে পারে। কারণ সেই পর্যায়টি সত্যিই ছোট। এটি শুধুমাত্র কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিনের জন্য স্থায়ী হয় এবং সুপারনোভা সনাক্ত করার কাজটি খুবই দুষ্কর। একই এক্সপোজারে আমরা চিত্রগুলির একটি ক্রম দেখতে সক্ষম হয়েছি। যেমন একটি সুপারনোভার একাধিক মুখ গবেষণাপত্রটির প্রথম লেখক ওয়েনলেই চেন ব্যাখ্যা করে বলছেন।

মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্টডক্টরাল গবেষক এবং নেচার জার্নালে প্রকাশিত গবেষণার প্রধান লেখক ওয়েনলেই চেনের মতে তা হল ২০১০ সালের হাবল পর্যবেক্ষণ সংরক্ষণাগার ডেটার পর্যালোচনাতে চিত্রগুলি আবিষ্কৃত হয়েছে। মহাবিশ্বের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা একটি সুপারনোভাকে বিস্তারিতভাবে দেখতে পেরেছেন।

নাসা বলছে যে, এই ছবিগুলি এবং সেই সংক্রান্ত গবেষণা বিজ্ঞানীদের প্রাথমিক মহাবিশ্বে নক্ষত্র এবং ছায়াপথের গঠন সম্পর্কে আরও জানতে সাহায্য করতে পারে। এই ধরনের ধ্বংসপ্রাপ্ত নক্ষত্রকে ‘রেড সুপারজায়েন্ট’ বলা হয়। এগুলি ‘বামন ছায়াপথে বাস করত এবং অপেক্ষাকৃত সংক্ষিপ্ত জীবনকালের শেষেই বিস্ফোরিত হয়।মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিদ্যার অধ্যাপক এবং অধ্যয়নের সহ লেখক প্যাট্রিক কেলি বলছেন যে, সুপারনোভা প্রসারিত এবং শীতল হচ্ছে। তাই এর রং গরম নীল থেকে শীতল লালে বিকশিত হচ্ছে।

আরও পড়ুন: হাসছে মহাকাশে গনগনে সূর্য! গ্রহণের পর হঠাৎ পরিবর্তন, এর প্রভাব পড়তে পারে পৃথিবীতে

এদিকে চেন যোগ করেছেন যে, লাল সুপারজায়ান্টগুলি উজ্জ্বল, বৃহদায়তন এবং বড় তারা। তবে তারা অন্যান্য বৃহদায়তন নক্ষত্রের তুলনায় অনেক বেশি শীতল। এই কারণেই তারা লাল। একটি লাল সুপারজায়ান্ট তার কেন্দ্রে ফিউশন শক্তি নিঃশেষ করে দেওয়ার পরে পতন ঘটবে এবং বিস্ফোরণের পর তারার বাইরের স্তরগুলিকে বিস্ফোরিত করবে।

আরও পড়ুন: মহাকাশে প্রজনন কি সম্ভব? বাঁদর ও মাছ পাঠিয়ে পরীক্ষা করতে চলেছে চিন

হাবল এক্সপোজ়ারটি বিবর্ণ সুপারনোভার রঙের দ্রুত পরিবর্তনকেও ক্যাপচার করেছে।যা তাপমাত্রা পরিবর্তনকে নির্দেশ করে। সুপারনোভা যত বেশি গরম হবে তত তা নীল বর্ণ ধারণ করবে। হাবল স্পেস টেলিস্কোপ দ্বারা ক্যাপচার করা ছবির প্রথম পর্বটিও নীল দেখায়। সুপারনোভা ঠান্ডা হওয়ার সঙ্গে তার আলো আরও লাল হয়ে গেল। এই গবেষণা দলটি প্রাথমিক মহাবিশ্বের একটি মৃত নক্ষত্রের আকার পরিমাপ করতেও সক্ষম হয়েছিল।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url