রহস্যময় বহু পুরনো এক সৌরজগতের সন্ধান পেলেন এবার বিজ্ঞানীরা
বহু পুরনো এক সৌরজগতের ছবি। |
ওয়েস্টার্ন ডেটা সায়েন্স: এবার বিজ্ঞানীরা মহাকাশে একটি প্রাচীন সৌরজগতের সন্ধান পেয়েছেন। যা আমাদের এই মহাজাগতিক দুনিয়ার থেকে অনেকটাই আলাদা।প্রায় ৯০ আলোকবর্ষ দূরে গবেষকরা একটি ১০ বিলিয়ন বছরেরও বেশি পুরনো সাদা বামন নক্ষত্রকে দেখেছেন । যা সূর্যেরই মতো একটি মৃত নক্ষত্রের অবশিষ্ট উষ্ণ অংশ। সেটি গ্রহের ভাঙা টুকরোগুলির সমষ্টি দ্বারা বেষ্টিত। যাকে প্ল্যানেটসিমাল বলা হয়। এই অস্পষ্ট তারকাটির সৃষ্টিও হয়েছে ওই টুকরো টুকরো বস্তুগুলি দ্বারা।
বহু পুরনো সৌরজগতে কি কি রয়েছে
আমাদের চারপাশের থেকে অনেক আলাদা এই সৌরজগতটি। এটি দুটি উপাদন রয়েছে লিথিয়াম এবং পটাশিয়ামের দ্বারা ভরপুর। কিন্তু আমাদের সৌরজগতের কোনও গ্রহেরই গঠন এমন নয়।এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আমাদের আদি মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে এই প্রাচীনতম সৌরজগত কেন এতটা আলাদা ছিল? লিথিয়াম এবং পটাশিয়ামের মতো বিরল উপকরণগুলি কীভাবেই সমৃদ্ধ এই সৌরজগত? ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ছাত্র অ্যাবিগেইল এলমস যিনি সাদা বামন গ্রহ বলেছেন।
এই সৌরজগৎ পুরনো। অর্থাৎ শ্বেত বামন (যাকে WDJ2147-4035 বলা হয়) এবং তার আশপাশের সৌরজগৎ গঠিত হয় এবং মারাও যায় সূর্য ও পৃথিবীর জন্মের আগেই। প্রকৃতপক্ষে, WDJ2147-4035 এর চারপাশে প্রাক্তন গ্রহের খণ্ডগুলি হল প্রাচীনতম গ্রহের প্রাণী। যা আমাদের ছায়াপথে একটি সাদা বামনের চারপাশে পাওয়া গিয়েছে এলমস উল্লেখ করেছেন।এই সৌরজগতের সম্পূর্ণ রহস্য গবেষণাটি এই সপ্তাহে রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির মান্থলি নোটিস সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
নতুন এই সৌরজগত কী দিয়ে তৈরি
অবসার্ভেটরি ব্যবহার করে তাঁরা মহাকাশে এই শ্বেত বামন এবং একই বয়সের আর একটি গ্রহ আবিষ্কার করেছেন। যার নাম গাইয়া । সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার সময় এই দূরবর্তী মহাকাশযানটি মহাজাগতিক নক্ষত্র এবং ছায়াপথগুলিকে ম্যাপ করছে। এই সাদা বামনগুলিকে চিহ্নিত করার পরে গবেষকরা চিলির উচ্চ উচ্চতায় অবস্থিত এক্স-শুটার নামক একটি যন্ত্রের সাহায্য নেন। যা তারার বায়ুমণ্ডলে কী রয়েছে এবং কী নেই তা সনাক্ত করার কাজে লেগেছিল।
আরও পড়ুন: অন্তহীন ব্ল্যাক হোলে মিশছে ছায়াপথ, অভূত ছবি তুলল জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ
এ প্রসঙ্গে জেনে রাখা ভাল যে, স্পেকট্রোমিটার নামক মূল্যবান জ্যোতির্বিদ্যার হাতিয়ারের একটি প্রকার হল এই এক্স-শুটার। WDJ2147-4035-এ লিথিয়াম পটাশিয়াম এবং সোডিয়ামের মতো রাসায়নিক পদার্থগুলি বর্ধিত হয়েছে। অথবা মাধ্যাকর্ষণ দ্বারা এর চারপাশে জড়ো হয়েছ। প্রাচীন নক্ষত্রটিতে এই ধরনের উপাদানের সন্ধান পাওয়া সম্পর্কে এমনটাই বলছেন গবেষকরা। শ্বেত বামনগুলি হাইড্রোজেন বা হিলিয়াম দিয়ে তৈরি।তাই গ্রহের পাথুরে অবশিষ্টাংশগুলি অন্যান্য উপাদান সরবরাহে এদের অবদান ছিল যথেষ্ট।
আরও পড়ুন: গোল্ডেন পয়জ়ন ফ্রগ ব্যাঙ ১০ জন মানুষকে মুহুতে শেষ করে দিতে পারে, দাবি গবেষকদের
আর সেখান থেকেই গবেষকরা ইঙ্গিত পেয়েছেন যে, এদের মধ্যে কীরকম ভাবে এমন বিভিন্ন উপাদান ছিল। যা আমাদের সৌরজগতে নেই।মজার ব্যাপার হল যে, বিজ্ঞানীরা যে অন্য সাদা বামন (WDJ1922+0233) নক্ষত্র আবিষ্কার করেছিল তা অনেক রহস্যময়। তাঁরা নির্ধারণ করেছেন যে, এই তারাটি গ্রহের ধ্বংসাবশেষে টানছে যা পৃথিবীর পাথুরে ভূত্বকের মতো। যদিও এই সৌরজগত যেখানে আমাদের সঙ্গে মেলে না। ঠিক সেখানেই অন্যটি দেখায় যে, পৃথিবী মহাজাগতিকে এতটা অনন্য নয় এর মতো অন্য সৌরজগতও রয়েছে।