মহাবিশ্বের শুরু ও শেষ কোথায়
মহাবিশ্বের ছবি |
মহাবিশ্বের গঠন
বন্ধুরা চলে এলাম আপনাদের নতুন কিছু তথ্য দিতে, স্থান ও সময় এবং এদের অন্তর্ভুক্ত সকল বিষয় নিয়েই মহাবিশ্ব।পৃথিবী এবং অন্যান্য সমস্ত গ্রহ , সূর্য ও অন্যান্য তারা ও নক্ষত্র , জ্যোতির্বলয়স্থ স্থান ও এদের অন্তর্বর্তীস্থ গুপ্ত পদার্থ , ল্যামডা-সিডিএম নকশা , তমোশক্তি ও মহাশূণ্য (মহাকাশ) যেগুলো এখনও তাত্ত্বিকভাবে অভিজ্ঞাত কিন্তু সরাসরি পর্যবেক্ষিত নয়, এমন সব পদার্থ ও শক্তি মিলে যে জগৎ তাকেই বলা হচ্ছে মহাবিশ্ব বা বিশ্ব-ভ্রম্মান্ড।
আমাদের পর্যবেক্ষণ-লব্ধ মহাবিশ্বের ব্যাস প্রায় ৯৩ বিলিয়ন parsec (৩০০ বিলিয়ন light-year)। পুরো বিশ্বের আকার অজানা হলেও এর উপাদান ও সৃষ্টিধারা নিয়ে বেশ কয়েকটি hypotheses বিদ্যমান ।মহাবিশ্বের উৎপত্তি সংক্রান্ত বিষয়কে বলে বিশ্বতত্ত্ব। দৃশ্যমান মহাবিশ্বের সুদূরতম প্রান্তের পর্যবেক্ষণ ও বিভিন্ন তাত্ত্বিক গবেষণায় মনে হয় মহাবিশ্বের প্রতিটি প্রক্রিয়াই তার সৃষ্টি থেকেই একই ধরনের প্রাকৃতিক নিয়ম ও কয়েকটি নির্দিষ্ট ধ্রুবক দ্বারা নির্ধারিত হয়। বিগ ব্যাং (Big Bang) তত্ত্ব অনুসারে এর আয়তন ক্রমবর্ধমান। সম্প্রতি আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানীদের বিভিন্ন তত্ত্বে আমাদের এই দৃশ্যমান মহাবিশ্বের পাশাপাশি আরো অনেক মহাবিশ্ব থাকার অর্থাৎ অনন্ত মহাবিশ্ব থাকার সম্ভাবনার কথাও বলা হচ্ছে।
মহাকাশের শুরু
আমরা আকাশের দিকে তাকালে দূর দূরান্তের অনেক বস্তু দেখতে পাই। দিনের আকাশের সূর্য রাতের আকাশের গ্রহ, উপগ্রহ, নক্ষত্র ইত্যাদি আমাদের চোখে পড়ে। আমরা যদি দূরবিক্ষণ দিয়ে আকাশের দিকে তাকাই আরও অনেক কিছু দেখতে পাই। বৃহস্পতি গ্রহ তার উপগ্রহসহ জ্বলজ্বল করতে থাকে। গ্রহ, নক্ষত্র, ছায়াপথ, গ্যালাক্সি ইত্যাদির মাঝখানে যে খালি জায়গা তাকে মহাকাশ বা মহাশূন্য বলে। মহাকাশের দিকে তাকালে আমরা যেসব বস্তু দেখতে পাই তা হল পদার্থ, যেমন আমাদের এই পৃথিবী। মহাকাশ কোনো পদার্থ দিয়ে তৈরি নয়। মহাকাশ বলতে পদার্থের অনুপস্থিতি বোঝায়। এটা হল সে ফাঁকা জায়গা বা অঞ্চল যেখান দিয়ে পৃথিবী, চাঁদ, সূর্য ও তারারা চলাচল করে। পৃথিবীর মতো এর বায়ুমণ্ডলও মহাকাশে ঘুরছে। এজন্য বায়ুমণ্ডলকেও মহাকাশের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। একে পৃথিবীর অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অধিকাংশ বায়ুমণ্ডল পৃথিবীর বেশ কাছাকাছি। অধিকাংশ বিজ্ঞানী মনে করেন, পৃথিবী থেকে ১৬০ কিলোমিটার উচ্চতায় বায়ুমণ্ডলের শেষ এবং মহাকাশের শুরু।
মহাবিশ্বের ছবি |
মহাবিশ্বের শেষ সীমানা
সত্য বলতে মহাকাশের কোনো সীমা নেই। বিজ্ঞানীদের মতে বিগ ব্যাং অর্থাৎ অত্যান্ত ঘন বস্তু থেকে সম্প্রসারণের মাধ্যমে মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়েছে। যা এখন পর্যন্ত সম্প্রসারণ হয়েই চলেছে। অর্থাৎ মহাবিশ্বের কোনো সীমা নেই ।উত্তরটা কিন্তু খুবই হতাশাজনক কারণ আমরা কখনই মহাবিশ্বের শেষ প্রান্তে পৌছাতে পারব না। এর কারনটা কিন্তু এই না যে যেতে খুব বেশি সময় লাগবে ।
যদিও কথাটা সত্যি, কিন্তু আসল কারনটা হলো যে, আমরা যদি মহাবিশ্বের বাইরের দিকে একটা সরলরেখা ধরে ক্রমাগত বিরামহীণ ভাবে অনন্তকাল ধরে যেতেই থাকি তারপরও আমাদের পক্ষে কখনই মহাবিশ্বের শেষ সীমানায় পৌছানো সম্ভব হবে না। বরং আমরা যে জায়গা থেকে শুরু করেছিলাম সেখানেই আবার ফিরে আসার সম্ভাবনা আছে। আর ততক্ষণে হয়ত আমাদের আরেকবার চেষ্টা করার উৎসাহ আর থাকবে না।
আরও পড়ুন: দু’বছরের মধ্যেই মহাকাশে চালু ফিল্ম স্টুডিয়ো, বানানো হচ্ছে স্পোর্টস এরিনাও
মহাবিশ্বটা একই সাথে বাউন্ডলেস কিন্তু ফাইনাইট। এটা বোধগম্য করা আমদের ইনট্যুইশন বা অন্তর্জ্ঞানের জন্যে একটা বিশাল চ্যালেন্জ। জীববিজ্ঞানী জে.বি.এস হ্যালডেন মজা করে বলেছিলেন, মহাবিশ্বটা আসলে আমরা যতখানি ভাবি তার থেকেও বেশি অস্বাভাবিক বা যতখানি আমাদের ইমাজিন করার ক্ষমতা আছে তার থেকেও অনেক বেশি অস্বাভাবিক।মহাবিশ্বের যেরকম কোনো স্হান নেই যেখানে আমরা দাড়িয়ে বলতে পারব এইটা হচ্ছে এর শেষ সীমানা । কোনো কেন্দ্রও নাই যেখানে আমরা দাড়িয়ে বলতে পারব যে, সেই এখান থাকে সব কিছুর শুরু হয়েছিলো বা এটাই মহাবিশ্বের কেন্দ্রবিন্দু।
আরও পড়ুন: চার সূর্য এক আকাশে, মহাকাশে নতুন দৃশ্যে বিস্মিত বিজ্ঞানীরা
আমরা জানি মহাবিশ্বটা ততদূর লম্বা বা যতদূর পর্যন্ত আলো মহাবিশ্ব সৃষ্টির পর থেকে আজ পর্যন্ত পৌছাতে পেরেছে। এই দৃশ্যমান বিশ্ব যেটা সম্পর্কে আমরা জানি বা যেটা নিয়ে কথা বলতে পারি তা মিলিয়ন, মিলিয়ন, মিলিয়ন, মিলিয়ন (১,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০) মাইল ব্যাপি বিস্তৃত।এর পরে আরও যা আছে সেটার হিসাব হয়ত সংখ্যা দিয়ে প্রকাশ করা যাবে না।