টলটলে জল পৃথিবীর মতো গ্রহ খুঁজে পেলেন বিজ্ঞানীরা
বন্ধুরা চলে এলাম আপনাদের নতুন কিছু তথ্য দিতে, পৃথিবীর বাইরে অন্য গ্রহে কি প্রাণ আছে? মহাশূন্যে তাক করা টেলিস্কোপের কোটরে চোখ রেখে নিরন্তর এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের সেই সন্ধানের পথে সম্ভবত এসে গেছে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য।
টিওআই-১৪৫২বি সুপার আর্থ
মহাকাশে অবিকল পৃথিবীর মতো একটি গ্রহ খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কানাডার মনট্রিয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বাধীন একটি আন্তর্জাতিক গবেষকদল এই বিশেষ গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন। মহাকাশ বিজ্ঞানীরা এই গ্রহের নাম রেখেছেন টিওআই-১৪৫২বি বা সুপার আর্থ।আমাদের পৃথিবী থেকে এই গ্রহটি ১০০ আলোকবর্ষ দূরে। সুপার আর্থ পৃথিবীর চেয়ে পাঁচ গুণ বড়।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে, সুপার আর্থ এর মধ্যে রয়েছে এক বিশাল সমুদ্র। সমগ্র গ্রহের ৩০ শতাংশ জুড়ে সে সমুদ্রের বিস্তৃতি তাতে টলমল করে জল। সারা পৃথিবীতে যত জল আছে। তা সুপার আর্থ এর মাত্র এক শতাংশ ভরের সমান।সুপার আর্থ এর এক বছর হয় মাত্র ১১ দিনে। কারণ একটি নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করতে এর ১১ দিন সময় লাগে। এই নক্ষত্রটি বেশ ছোট এবং গ্রহটির অনেক কাছে রয়েছে।দুইয়ের মধ্যে দূরত্ব সূর্য শুক্র দূরত্বের সমান।
সূর্যের চেয়ে এই গ্রহের তেজও অনেক কম। তাই সুপার আর্থ’এ তরল অবস্থায় জল থাকা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তবে অন্য যে নক্ষত্রের চার দিকে এই গ্রহটি ঘোরে সেটি অনেক দূরে। তার চার দিকে একবার ঘুরতে সুপার আর্থ এর সময় লাগে ১ হাজার ৪০০ বছর।নাসার বিজ্ঞানীরা একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন যে, আমাদের সৌরমণ্ডলে কয়েকটি উপগ্রহের সঙ্গে এই সুপার আর্থ এর কিছুটা মিল রয়েছে।
আরও পড়ুন: মিল্কিওয়ের কোথায় আছে ভিনগ্রহীরা ?
বৃহস্পতির উপগ্রহ গ্যানিমিড ক্যালিস্টো এবং শনির উপগ্রহ টাইটান, এনসিলাডাসের ভিতর এমন মহাসমুদ্র লুকিয়ে রয়েছে বলে মনে করা হয়। তবে সে জলরাশি রয়েছে বরফের নীচে চাপা।সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে দাবি যে, নতুন এই গ্রহ পৃথিবীর চেয়ে অনেক বড়। এর আয়তন পৃথিবীর আয়তনের থেকে ৭০ শতাংশ বেশি। পৃথিবীর চেয়েও গভীর সমুদ্র রয়েছে সেখানে। তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হল এই গ্রহের প্রদক্ষিণ বৈশিষ্ট্য। একসঙ্গে দু-দু’টি নক্ষত্রের চারদিকে ঘোরে গ্রহটি।
আরও পড়ুন: মঙ্গলের কোথায় জল রয়েছে, তার মানচিত্র প্রকাশ করল ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি
একশো আলোকবর্ষ দূরের এই গ্রহে সত্যিই প্রচুর জল রয়েছে কি না, তা জানার জন্য আরও পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। তবে একই সঙ্গে তাঁরা মনে করছেন যে, জল থাকলেও এই গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব থাকা সম্ভব নয়। আদ্যোপান্ত পাথুরে গ্রহটিতে সামান্য হাইড্রোজেন এবং হিলিয়াম থাকলেও থাকতে পারে বলে তাঁদের ধারণা। জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের সাহায্যে এই গ্রহকে আরও ভাল ভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন বিজ্ঞানীরা। তার পরই তাঁরা বহু প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন।