পৃথিবীতে ছোট পাহাড়ে দেখা যাবে দুটো সূর্য!
ছবি: সংগৃহীত । |
বন্ধুরা চলে এলাম আপনাদের নতুন কিছু তথ্য দিতে, ফ্রান্সের দক্ষিণ পূর্বের প্রোভেন্স অঞ্চলের একটি ছোট পাহাড় থেকে আপনি দুটো সূর্য দেখতে পারেন। একটি সূর্য সাড়ে চার বিলিয়ন বছর ধরে উদিত হয়ে পৃথিবীকে শক্তি জুগিয়ে দিনের শেষে অস্ত যাচ্ছে। অন্যটি নির্মিত হচ্ছে হাজারো প্রতিভাবান মস্তিষ্ক ও হাতের দ্বারা বিকশিত হচ্ছে ধীরে ধীরে। সত্যিকারের সূর্যের শেষ রশ্মিগুলো ছড়িয়ে দেয় মায়াবি আভা। আর একটি বিশাল নির্মাণ সাইটে তৈরি হতে যাওয়া সূর্য হয়তো মানব ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অস্তিত্বের সঙ্কটের সমাধান করতে পারবে।
পৃথিবীতে তৈরি হচ্ছে সূর্য
সিএনএনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয় যে, সেন্ট পল লা ডুরেন্সের ছোট্ট এলাকায় ৩৫টি দেশের বিজ্ঞানীরা পারমাণবিক ফিউশন ঘটানোর চেষ্টা এবং সেই কাজে দক্ষতা অর্জনের জন্য একত্রিত হয়েছেন। আর এই প্রক্রিয়াটি প্রাকৃতিকভাবে ঘটে সূর্য এবং সমস্ত নক্ষত্রে। তবে পৃথিবীর বুকে ঠিক কিছু ঘটানো দারুণ কঠিন।ফিউশন কার্যত একটি সীমাহীন শক্তির যোগান দেয়। যা জীবাশ্ম জ্বালানির অনেকটাই বিপরীত। কারণ, এতে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের হার শূন্য। সেই সাথে পামাণবিক ফিউশনে তৈরি হয় না কোনো তেজস্ক্রিয় বর্জ্য। তাই এই প্রযুক্তির বিকাশ আক্ষরিক অর্থেই মানবতাকে জলবায়ু পরিবর্তন থেকে বাঁচাতে পারে মানবসৃষ্ট যে দুর্যোগে ।
এই প্রযুক্তি আয়ত্ত করা গেলে নিঃসন্দেহে ফিউশন শক্তি বিশ্বের শক্তির চাহিদা অনেকটাই পূরণে সক্ষম হবে। ইনপুট হিসাবে মাত্র ১ গ্রাম জ্বালানিকে ফিউশনের মাধ্যমে আট টন তেলের সমতুল্য শক্তিতে পরিণত করতে পারবে। ফিউশন শক্তি কখন সহজলভ্য হবে। এমন প্রশ্নের জবাবে পরমাণু বিশেষজ্ঞরা প্রায়ই মজা করে বলেন যে, আপনি যখনই প্রশ্নটি জিজ্ঞাসা করুন না কেন, উত্তর সবসময়ই ৩০ বছর দূরে। কিন্তু প্রথমবারের মতো এবার ইতিহাসে ফিউশন শক্তি সত্য হতে পারে।
ছবি: সংগৃহীত । |
পারমাণবিক ফিউশন পৃথিবীতে টিকিয়ে রাখা সম্ভব
গত ফেব্রুয়ারিতে অক্সফোর্ডের কাছে কুলহ্যামের একটি গ্রামে বিজ্ঞানীরা বেশ বড়সড় অগ্রগতির ঘোষণা দিয়েছিলেন। তারা টোকামাক নামক একটি বিশাল ডোনাট আকৃতির মেশিনে পাঁচ সেকেন্ডের জন্য রেকর্ড ৫৯ মেগাজুল ফিউশন শক্তি তৈরি করেছিলেন তারা এবং তা টিকেও ছিল। উল্লেখ্য যে এই পরিমাণ শক্তি একদিনের জন্য শুধুমাত্র একটি ঘরের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট। আরও চমকপ্রদ ব্যাপার হচ্ছে যে, ফিউশন থেকে বেরিয়ে যাওয়া শক্তির চেয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে উৎপন্ন শক্তির পরিমাণ ছিল বেশি। সত্যিকারের এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে এটিকে বিবেচনা করার আরও একটি কারণ হচ্ছে। এতে প্রমাণিত হয়েছে যে পারমাণবিক ফিউশন পৃথিবীতে টিকিয়ে রাখা সম্ভব।
আরও পড়ুন: ৫০ বছরে এই প্রথম! সূর্যের এত স্পষ্ট ছবি আগে কখনও আসেনি
ইন্টারন্যাশনাল থার্মোনিউক্লিয়ার এক্সপেরিমেন্টাল রিয়্যাক্টর (আইটিইআর) এর এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হচ্ছে এটা প্রমাণ করা যে, ফিউশনকে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যায়। আর এটা প্রমাণিত হলে পৃথিবীতে প্রয়োজন হবে না কয়লা, তেল, গ্যাসের মতো আর কোনো জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার। আর কে না জানে জলবায়ু সঙ্কটের প্রধান কারণই হচ্ছে জীবাশ্ম জ্বালানি!
আরও পড়ুন: এবার গ্রহাণুর বুকে মিলল প্রাণের উপাদান, দাবি জাপানের বিজ্ঞানীদের
যুক্তরাজ্যে সাফল্য অর্জনের পর থেকেই প্রকল্পটি বেশ কিছু পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই প্রকল্পের ডিরেক্টর জেনারেল বার্নাড বাইগট মৃত্যুবরণ করেছেন গত ১৪ মে। আইটিইআরকে ৭ বছর নেতৃত্ব দেয়া বাইগটের ফিউশন শক্তি সম্পর্কে ছিল সংক্রামক’ মোহ যিনি বলতেন যে, জৈবিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে শক্তিই জীবন।
ধন্যবাদ বন্ধুরা ।