সৌরজগতের বাইরে মহাকাশযান ভয়েজার ১ রহস্যজনক আচরণ করছে

এবার মহাকাশযান ভয়েজার ১ রহস্যজনক আচরণ করছে
মহাকাশযান ভয়েজার ১ এর ছবি।


ন্ধুরা চলে এলাম আপনাদের নতুন কিছু তথ্য দিতে, আজ থেকে ৪ বছর আগে সৌরজগতের প্রান্তসীমা ছাড়িয়ে অসীমের পথে ছুটতে শুরু করে মহাকাশযান ভয়েজার ১। ১৯৭৭ সালে পৃথিবী থেকে যাত্রা শুরু করে এ মহাকাশযান সব মিলিয়ে প্রায় ৪৫ বছর যাত্রা করেছে এই মহাকাশে।

ভয়েজার ১ এখন কোথায

এ মহাকাশযান এখন পৃথিবী থেকে ২ হাজার ৩৩০ কোটি কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। পৃথিবী থেকে যাত্রা শুরুর পর ২০১৮ সালে এটি সৌরজগতের প্রান্তসীমা ছাড়িয়ে যায়। বিশাল এই পথ পাড়ি দিয়েও এখনও ঠিকঠাক কাজ করে যাচ্ছে এটি। নাসা থেকে বিজ্ঞানীরা যেসব কমান্ড দিচ্ছেন ভয়েজার সেটি গ্রহণ করছে ও সে অনুযায়ী কাজও করছে। এরপর তথ্য সংগ্রহ করে তা পৃথিবীতেও পাঠাচ্ছে। 

বর্তমান ভয়েজার ১কিভাবে কাজ করছে

সম্প্রতি এ মিশনের বিজ্ঞানীরা অদ্ভুত কিছু বিষয় লক্ষ্য করছেন। এই মহাকাশযানকে যা নিয়ন্ত্রণ করছে সেই অ্যাটিটিউড আর্টিকুলেশন অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেমে (এএসিএস) যে তথ্য আসছে।আর ভয়েজার আসলে যা করছে তা মিলছে না। তবে এএসিএস এটুকু নিশ্চিত করেছে যে, ভয়েজারের হাই-গেইন অ্যান্টেনা এখনও পৃথিবীর দিকেই মুখ করা আছে, যাতে মহাকাশযানটি নাসাকে তথ্য দিতে পারে।ভয়েজার এখন ইন্টারস্টেলার পর্যায়ে রয়েছে। অর্থাৎ পৃথিবী থেকে ভয়েজার বা ভয়েজার থেকে পৃথিবীতে আলো যেতে সময় লাগে ২০ ঘণ্টা ৩৩ মিনিট। ফলে ভয়েজার থেকে কোনো বার্তার আদান-প্রদানে দু’দিন সময় লাগে। 

ভয়েজার টিম এখনও পর্যন্ত বিশ্বাস করছে যে, এএসিএস ঠিকঠাক কাজ করছে। কিন্তু এর ডেটা রিডআউট বাস্তবসম্মত নয়। তবে এখনও পর্যন্ত একে সেফ মোডে নিয়ে নেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।আর ভয়েজারের সিগন্যাল আগের মতোই শক্তিশালী আছে। এর মানে হলো এর অ্যান্টেনা এখনও পৃথিবীর দিকেই মুখ করা আছে। ভয়েজার টিম এখন এটা বোঝার চেষ্টা করছে যে, ত্রুটিপূর্ণ যে ডেটা আসছে, তা এই ভয়েজার থেকেই আসছে না কি? অন্য কোনো সিস্টেমের জন্য এটা হচ্ছে। 

আরও পড়ুন: নাসার বর্তমান চেয়ারম্যান কে?

নাসা বলছে যে, যতক্ষণ না ঠিকমতো বোঝা যাচ্ছে যে আসলে কী ঘটছে, ততক্ষণ এটা বলা যাবে না যে, ভয়েজার সায়েন্স ডেটা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে পাঠানোর যে কাজ করে যাচ্ছে এতে কোনো প্রভাব পড়বে কি না বা আর ভয়েজার কতদিন এ কাজ চালিয়ে যেতে পারবে। 

আরও পড়ুন: মঙ্গলে প্রচুর পরিমান জল রয়েছে, সন্ধান দিল চিনের জুরং রোভার

ভয়েজার ১ ও ২-এর প্রজেক্ট ম্যানেজার সুজান ডড বলছেন যে, এ মহাকাশযানের বয়স এখন ৪৫ বছর। মিশন পরিকল্পনাকারীরা শুরুতে এর আয়ুষ্কাল নিয়ে যে ধারণা করেছিলেন এটা তার চেয়ে অনেক বেশি। এছাড়া আমরা এখন ইন্টারস্টেলার স্পেসে আছি। এমন হাই রেডিয়েশন পরিবেশে এর আগে কোনো মহাকাশযান পৌঁছায়নি। তাই ইঞ্জিনিয়ারিং টিমের জন্য এটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। আমার বিশ্বাস এটা সমাধানের কোনো পথ থাকলে আমাদের টিম তা খুঁজে বের করবে।

তিনি আরও বলেন, আর টিম যদি সমস্যার উৎস খুঁজে না পায় তবে এ পরিস্থিতির মধ্যেই কাজ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে মানিয়ে নেবেন তিনি। আর খুঁজে পেলে তা সফটওয়্যারে কোনো পরিবর্তন এনে বা হার্ডওয়্যার সিস্টেমে পরিবর্তন এনে তার সমাধান আনা যাবে। বছরে এখন খুব কম শক্তি উৎপাদন করছে ভয়েজার। তাই এর সাবসিস্টেম ও হিটারগুলো আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। এটা বন্ধ করা হয়েছে যাতে ক্রিটিক্যাল সিস্টেম ও সায়েন্স  ইনস্ট্রুমেন্ট কাজ চালিয়ে যেতে পারে।  ১৯৭৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ভয়েজার ১ পৃথিবী থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। ৪৫ বছর ধরে সৌরজগতের অজানা রহস্যের সন্ধান দিয়ে যাচ্ছে মহাকাশযানটি। 

ধন্যবাদ বন্ধুরা 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url