এবার মহাকাশে মাংস উৎপাদন করবে ইউরোপ!

এবার মহাকাশে মাংস উৎপাদন করবে ইউরোপ!
এবার মহাকাশে মাংস উৎপাদন করবে ইউরোপ ছবি।


বন্ধুরা চলে এলাম আপনাদের নতুন কিছু তথ্য দিতে, পৃথিবী থেকে মহাকাশে মাংস নিয়ে যাওয়া নয় | ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি এবার মহাকাশে মাংস উৎপাদনের চিন্তাভাবনা করছেন। খাসি নাকি মুরগি কার মাংস সেখানে উৎপাদিত হবে তাই ভাবছেন তো? আসলে বিজ্ঞানীরা চাইছেন কালচার্ড মিট তৈরি করতে । যা পৃথিবীর ল্যাবে তৈরি হবে এবং মহাকাশে অনেক দিন পর্যন্ত থেকে যাবে।

মহাকাশে কিভাবে মাংস উৎপাদন করবে বিজ্ঞানীরা

মহাকাশ বিজ্ঞানের ক্রমবর্ধমান অগ্রগতি আগেকার ছোট বড়ো অনেক সমস্যার সমাধান করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। উত্তর খুঁজবে অনেক অজানা প্রশ্নেরও। কিন্তু সেই মহাকাশে বিজ্ঞানীদের দীর্ঘদিন ধরে থেকে রিসার্চ করার জন্য একটা বিষয়ই যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং হিসেবে দেখা দিয়েছে তা হল খাদ্য। মহাকাশ বলে যে বিজ্ঞানীদের খিদে পাবে না এমন ব্যাপার তো আর নয়। তার থেকেও বড় কথা হল মহাকাশের আরও বিপজ্জনক চ্যালেঞ্জগুলি অ্যাক্সেপ্ট করতে বিজ্ঞানীদের আরও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার দাবারের উপরে ফোকাস করতে হবে। খাদ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে মাংস। আর সেই মাংস দীর্ঘদিন ধরে টিকিয়ে রাখার ব্যবস্থাও করতে হবে। আর এই সবদিক মাথায় রেখে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির বিজ্ঞানীরা এবার মহাকাশে মাংস উৎপাদনের চিন্তাভাবনা করছেন। 

দীর্ঘ দিন টিকিয়ে রাখারও ঝক্কি নেই আবার খিদে পেলে যখন খুশিই তা খেয়ে নেওয়া যেতে পারে।মানুষ ইতিমধ্যে মহাকাশে গাছপালা লাগাতে সক্ষম হয়েছে। আর এখন বিজ্ঞানীরা ধাপে ধাপে মহাকাশে মাংস ফলাতে উদ্যত হয়েছেন। ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির তরফ থেকে দীর্ঘমেয়াদী মিশনে মহাকাশচারীদের খাওয়ানোর জন্য ল্যাবগুলিতে উত্থিত মাংসের বিকল্পগুলির গবেষণা করতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তারা আশাবাদী ।মহাকাশে মাংস ফলনের চ্যালেঞ্জকে কাটিয়ে উঠতে পৃথিবীতে এই বিকল্পের স্থায়িত্বের খোঁজে সফল হবেন।

কালচার্ড মিট বা ফলন করা এমন মাংসের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি মিশনে মহাকাশচারীদের খাওয়ানোর জন্য সর্বপ্রথম এমনতর আইডিয়া নিয়ে হাজির হয়েছিলেন ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির ইঞ্জিনিয়ার পাওলো কোরাডি। তাঁর কথায়, আমরা যদি পৃথিবী থেকে অনেক দূরে দীর্ঘমেয়াদী মানব অন্বেষণে সফল হতে চাই। তাহলে আমাদের মহাকাশচারীর পুষ্টি সম্পর্কে বর্তমান পদ্ধতিগুলির পুনর্বিবেচনা করতে হবে। পাশাপাশি দক্ষতার সঙ্গে সম্ভবত পুনরুৎপাদনশীল লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমের মধ্যে দিয়ে একত্রিত করে খাদ্য উৎপাদনের উপায় সরবরাহ করতে হবে।

রিসার্চ টিম স্পেস অ্যাপ্লিকেশ

গবেষণার অংশ হিসেবে এই রিসার্চ টিম স্পেস অ্যাপ্লিকেশনের জন্য প্রোটিন খাবারের বিকল্পগুলির সঙ্গে কালচার্ড মিটের পুষ্টির মান এবং সম্ভাব্য সুবিধাগুলি বিশ্লেষণ ও তুলনা করে দেখবে। পুষ্টি নির্দেশিকাগুলির উপর ভিত্তি করে দলটি মহাকাশচারীদের জন্য মহাকাশে মাংস ফলাতে প্রয়োজনীয়তার একটি সেট স্থাপন করবে এবং ভবিষ্যতের মানব মহাকাশযান মিশনও নির্বাচন করবে।পাওলো কোরাডি আরও বলছেন যে, গবেষণার বাস্তব রূপ দিতে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির তরফে মহাকাশচারীর পুষ্টি এবং হিউম্যান স্পেস ফ্লাইটে দক্ষতা প্রদান করা হবে। 

আরও পড়ুন: হাব্‌ল এর চোখে ধরা পড়ল প্রায় ১৪০০ কোটি বছর আগে ইয়ারেন্ডেল তারা

আর তার কারণ হল এই রিসার্চ দলটিকে স্পেস অ্যাপ্লিকেশনের জন্য কালচার্ড মিট উৎপাদনের জন্য একটি প্রাথমিক নকশা তৈরি করতে হবে। তাঁর কথায় যে, গবেষকরা সিস্টেমটিকে প্রোটিন খাদ্য উৎপাদনের জন্য অন্যান্য সম্ভাব্য অনবোর্ড সিস্টেমের সঙ্গে এবং বর্তমান পদ্ধতির সঙ্গে তুলনা করবে। যার মধ্যে পৃথিবী থেকে খাদ্য সরবরাহ করার বিষয়টিও জড়িত। তাঁরা স্থান এবং স্থল উভয় অ্যাপ্লিকেশনের জন্য একটি প্রচারমূলক প্রদর্শনকারীর সম্ভাব্য বাণিজ্যিক আগ্রহের মূল্যায়নও করবেন।

আরও পড়ুন: দীর্ঘ মহাকাশযাত্রায় নভশ্চরদের মস্তিষ্ক বদলে যায় আকারে ও কাজকর্মে

একটা বিষয় উল্লেখ করতেই হয় যে, মাংস উৎপাদনকে পরিবেশগত সমস্যাগুলির একটি বড় অংশের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দায়ী করা হয়েছে। যা সম্ভাব্য মহামারী রোগকে সহজতর করেছে এবং প্রতি বছর কোটি কোটি প্রাণীর দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি করোনাভাইরাস অতিমারিও ছড়িয়ে পড়েছিল উহানের একটি মাংসের বাজার থেকেই।এদিকে আবার ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির তরফ থেকে বলা হচ্ছে যে, বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গেই মাংসের চাহিদাও ঊর্ধ্বগগনে। ফলে, প্রচলিত মাংস উৎপাদন আরও বেশি টেকসই হয়ে উঠবে। এই কালচার্ড মিট প্রচলিত মাংসকে অতীতের অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারে। তবে তার উৎপাদন প্রযুক্তিতে আরও গবেষণার প্রয়োজন।

ধন্যবাদ বন্ধুরা 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url