পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের ব্ল্যাক হোল আসলে ব্ল্যাক হোল নয়!
হ্যালো বন্ধুরা,পৃথিবীর একদম কাছে থাকা ব্ল্যাক হোলের নাকি আদপে কোনও অস্তিত্বই নেই। সম্প্রতি এমনটাই জানিয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। চিলির ইউরোপীয়ান সাউদার্ন অবজারভেটরি বা ইএসও দাবি করেছিল যে, তারা পৃথিবীর একদম কাছে মাত্র ১০০০ আলোকবর্ষ দূরে একটি কৃষ্ণ গহ্বরের সন্ধান পেয়েছিলেন। এইচআর ৬৮১৯ সিস্টেমে ছিল সেই ব্ল্যাক হোলের অবস্থান। এই আবিষ্কার নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। কারণ পৃথিবী থেকে এক হাজার আলোকবর্ষ দূরত্বের মধ্যে ব্ল্যাক হোল থাকা বেশ অবিশ্বাস্য ব্যাপার। আর এই আবিষ্কারের কথা প্রকাশ্যে আসার পরেই সংশয় প্রকাশ করেছিলেন অনেক বিজ্ঞানী।
বর্তমানে দেখা গিয়েছে তাঁদের ধারণাই ঠিক। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একটি আন্তর্জাতিক দল সম্প্রতি গবেষণা করে প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, পৃথিবীর কাছে থাকা যে মহাজাগতিক বিষয়বস্তুকে ব্ল্যাক হোল বলা হচ্ছিল তা আসলে কৃষ্ণ গহ্বর নয়। ওই বিজ্ঞানীরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, এইচআর ৬৮১৯ সিস্টেমে কোনও ব্ল্যাক হোল নেই। জানা গিয়েছে যে, প্রাথমিক ভাবে পৃথিবীর কাছে ব্ল্যাক হোল থাকার ওই গবেষণা করেছিলেন ইএসও এর জ্যোতির্বিজ্ঞানী থমাস রিভিনিয়াস । আর নতুন গবেষণার পুরোধা ছিলেন বেলজিয়ামের কি ইউ লি।
প্রথমবার গবেষণার পর বলা হয়েছিল যে, এইচআর ৬৮১৯ আসলে একটি ট্রিপল স্টার সিস্টেম। এর মধ্যে একটি নক্ষত্র খুব কাছের থেকে একটি কৃষ্ণ গহ্বর বা ব্ল্যাক হোলকে প্রদক্ষিণ করছে। আর বাকি একটি নক্ষত্র রয়েছে চওড়া কক্ষপথে। কিন্তু ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই আর এক গবেষক সেই সময় দাবি করেছিলেন যে, সম্ভবত এই সিটেমের মধ্যে দুটোই নক্ষত্র রয়েছে। আর ব্ল্যাক হোল বলে যাকে চিহ্নিত করা হচ্ছে তা আসলে ভুল। কারণ নক্ষত্রদের মধ্যে অনেকসময়েই এক অদ্ভুত ক্রিয়াকলাপ লক্ষ্য করা যায়। যাকে রক্তপিশাচ বা ড্রাকুলাদের সঙ্গে কাজকর্মের সঙ্গে তুলনা টেনে বলা হয় ।
এর অর্থ হল একটি নক্ষত্র অন্যটির থেকে দূরে সরে যাচ্ছে এবং ওই নক্ষত্রের ভরের বেশিরভাগটাই শোষণ করছে।বিভিন্ন মতামত প্রকাশ্যে আসায় তিনজন জ্যোতির্বিজ্ঞানী রিভিনিয়াস, বোডেনস্টাইনার এবং তুষারপাত সিদ্ধান্ত নেন যে, এইচআর ৬৮১৯ কে আরও ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করে খুঁটিয়ে দেখা হবে। আর তার মাধ্যমেই বোঝা যাবে যে কোন মতবাদ সত্যি। পর্যবেক্ষণ করে দেখা গিয়েছে যে ওই অঞ্চলে দু’টি আলো উৎস রয়েছে। এখন প্রশ্ন হল তারা একে অন্যকে খুব ঘনিষ্ঠভাবে প্রদক্ষিণ করছে নাকি দূরবর্তী অবস্থানে থেকে কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করছে।
আরও পড়ুন: বৃহস্পতির চাঁদ ইউরোপায় প্রাণ খুঁজবে এসইউভি মহাকাশযান
আরও পড়ুন: জ্যোতির্বিজ্ঞান এর জনক কে?
কাছাকাছি থেকে প্রদক্ষিণের বিষয়টিকে বলে ডোরাকাটা তারকা দৃশ্যকল্প। আর দূরবর্তী স্থানে থেকে দু’টি নক্ষত্র একে অন্যকে প্রদক্ষিণ করলে তাকে বলা হবে ব্ল্যাক হোল অবস্থান। দ্বিতীয় পর্যবেক্ষণের সময় ইএসও এর বড় টেলিস্কোপের সাহায্যে অনেক বেশি খতিয়ে দেখে বিজ্ঞানীরা বুঝতে পেরেছেন যে এইচআর ৬৮১৯ একটি বাইনারি সিস্টেম ।যেখানে রয়েছে দুটো নক্ষত্র। এখানে কৃষ্ণ গহ্বর বা ব্ল্যাক হোলের কোনও চিহ্নই নেই।
ধন্যবাদ বন্ধুরা ।