নাসা নতুন ‘রিং নেবুলা’- র ছবি প্রকাশ করেছে, নীহারিকার চারপাশে ছড়িয়ে রয়েছে ফুলের পাপড়ি
নাসা নতুন ‘রিং নেবুলা’- র ছবি প্রকাশ করেছে, নীহারিকার চারপাশে ছড়িয়ে রয়েছে ফুলের পাপড়ি ছবি। |
বন্ধুরা চলে এলাম আপনাদের নতুন কিছু তথ্য দিতে, মার্কিন স্পেস এজেন্সি নাসা তাদের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে মাঝে মাঝেই বেশ কিছু বিস্ময়কর নীহারিকার ছবি শেয়ার করে। সম্প্রতি তারা এমন এক ছবি প্রকাশ করেছে যা দেখে একঝলকে মনে হবে মহাকাশের বুকে যেন কোনও মহাজাগতিক ফুল প্রস্ফুটিত হয়ছে (মহাজাগতিক ফুল ফুটেছে)। অপূর্ব শোভা সেই ফুলের। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে, দেখতে ফুলের মতো লাগলেও আসলে তা একটি নীহারিকা। একে রিং নেবুলা বা বলয় নীহারিকা অ্যাখ্যা দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
পৃথিবী থেকে প্রায় দু’হাজার আলোকবর্ষ দূরে এই নীহারিকার অবস্থান। লায়রা নক্ষত্রপুঞ্জে এই রিং নেবুলা দেখা গিয়েছে। যে ছবি ইনস্টাগ্রামে নাসা শেয়ার করেছে সেখানে নীহারিকার চারপাশে ফুলের পাপড়ির মতো বেশ কিছু অংশ দেখা গিয়েছে। নাসার স্পিটজার স্পেস টেলিস্কোপের সাহায্যে এই ছবি তোলা হয়েছে। প্ল্যানেটারি নেবুলার চারপাশে হলো আকারে বিস্তৃত রয়েছে এই ফুলের পাপড়ির ন্যায় অংশ। নাসা জানিয়েছে যে, একটি মৃত নক্ষত্র থেকে নির্গত উপকরণ থেকে তৈরি হয়েছে ওই প্ল্যানেটারি নেবুলার বাইরের অংশ বা আউটার শেল।
এই রিং নেবুলাকে এম৫৭ নামেও জানা গিয়েছে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, সূর্যের মতো কোনও নক্ষত্রের উজ্জ্বল অবশিষ্টাংশ থেকে এই নীহারিকা তৈরি হয়েছে। ১৭৭৯ সালে ফরাসি জ্যোতির্বিজ্ঞানী অ্যান্টোইন দারকুয়ের ডি পেলেপইক্সএই ফুলের পাপড়ির আকারের প্ল্যানেটারি নীহারিকা আবিষ্কার করেছিলেন। এই নীহারিকার একদম কেন্দ্রস্থলে থাকা বলয় আসলে একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত তারার চারপাশের জ্বলন্ত গ্যাস এবং ধুলোর সমন্বয়ে তৈরি একটি পুরু সিলিন্ডারের মতো আকার নিয়েছে।
নাসা জানিয়েছে যে, যখন ওই নক্ষত্র মৃতপ্রায় পর্যায়ে পৌঁছোবে তখন কেন্দ্রস্থল ছোট এবং উত্তপ্ত হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে বাইরের অংশের লেয়ারগুলিকে উত্তপ্ত করবে। সেই অংশ তখন কার্যত ফুটতে থাকবে।নাসার স্পিটজার স্পেস টেলিস্কোপের ইনফ্রারেড ক্যামেরার সাহায্যে এই ছবি তোলা হয়েছে। সেখানে স্পষ্ট হয়েছে নেবুলার বাইরের লেয়ারগুলি। সেখানে ফুলের পাপড়ির মতো অংশ দেখা গিয়েছে। বর্তমানে অবশ্য আর অভিযান চালায় না এই নাসার স্পিটজার স্পেস টেলিস্কোপ।
আরও পড়ুন: নীহারিকা কিভাবে সৃষ্টি হয়? নীহারিকা থেকে তারা কিভাবে তৈরি হয়
নীহারিকার চারপাশে ছড়িয়ে রয়েছে ফুলের পাপড়ি প্রতীকী ছবি। |
আরও পড়ুন: পৃথিবীর মত রয়েছে আরও ৫০০০ পৃথিবী! কোথায় জানেন?
২০০৩ সালের অগস্ট মাসে লঞ্চ করা হয়েছিল এই স্পেস টেলিস্কোপ। তখন নাম ছিল স্পেস ইনফ্রারেড টেলিস্কোপ ফেসিলিটি। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে এর অভিযান বন্ধ করা হয়েছে। তার আগেই এই রিং নেবুলার ছবি তুলেছিল নাসার এই স্পিটজার স্পেস টেলিস্কোপ। এছাড়াও এই স্পেস টেলিস্কোপ শনি গ্রহের একটি সুবিশাল বলয় আবিষ্কার করেছে। এর পাশাপাশি সাত সাতটি পৃথিবীর সমান আকার-আয়তনের গ্রহ আবিষ্কার করেছে। যারা পৃথিবী থেকে ৪০ আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে। বহু দূরের ছায়াপথের উপরেও নজরদারি চালিয়েছে এই স্পেস টেলিস্কোপ।
ধন্যবাদ বন্ধুরা ।