চাঁদে যা অক্সিজেন সঞ্চিত রয়েছে, তা প্রায় ৮ বিলিয়ন মানুষ কে এক লক্ষ বছর ধরে অক্সিজেন দেওয়া যাবে
চাঁদে যা অক্সিজেন সঞ্চিত রয়েছে, তা প্রায় ৮ বিলিয়ন মানুষ কে এক লক্ষ বছর ধরে অক্সিজেন দেওয়া যাবে ছবি। |
বন্ধুরা চলে এলাম আপনাদের নতুন কিছু তথ্য দিতে, মহাকাশ বিষয়ক গবেষণা সবসময়েই অত্যন্ত রহস্যজনক এবং আকর্ষণীয়। বর্তমানে মহাকাশ সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের গবেষণাতেই মজেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের কাছে ক্রমশ আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। পৃথিবীর বাইরে অন্যান্য গ্রহ উপগ্রহ নিয়ে নিত্যনতুন তথ্যও প্রকাশ্যে আসছে। আর এইসব গবেষণা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যেই অন্যতম ছিল চাঁদের অক্সিজেন সংক্রান্ত আলোচনা। চন্দ্রপৃষ্ঠে সবচেয়ে ভাল কোন পদ্ধতিতে অক্সিজেন উৎপাদন সম্ভব হবে। তা নিয়ে এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছিলেন বৈজ্ঞানিকরা।
এই গবেষণায় সমাধানও পাওয়া গিয়েছে। চাঁদের উপর যে পাথুরে আবরণ রয়েছে যাকে রেগোলিথ বলে।সেখানে প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেন সঞ্চিত রয়েছে। এই অক্সিজেন মানবকুলের বেঁচে থাকার জন্য কাজে লাগানো যেতে পারে। নতুন গবেষণায় বলা হচ্ছে যে, চাঁদের পৃষ্ঠদেশে যথেষ্ট পরিমাণ অক্সিজেন সঞ্চিত রয়েছে। এই পরিমাণ অক্সিজেন ৮ বিলিয়ন লোককে প্রায় এক লক্ষ বছর ধরে অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারবে। তবে এই অক্সিজেন গ্যাসীয় অবস্থায় সঞ্চিত নেই। আপাতত বিজ্ঞানীরা এই অক্সিজেন নিষ্কাশন করার উপযুক্ত পথ খুঁজছেন। মূলত চাঁদের একদম উপরের আস্তরণের পাথরে সঞ্চিত রয়েছে মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালিয়ের ওয়েবসাইটে উল্কা তথ্য- এর রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। ওই রিপোর্ট অনুসারে চাঁদের রেগোলিথ ৪১ থেজে ৪৫ শতাংশ অক্সিজেন উৎপাদন করতে পারে। স্পেস .কম- এর আর একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, চাঁদের একদম উপরের আস্তরণ অর্থাৎ রেগোলিথ থেকে অক্সিজেন বের করার জন্য বৈজ্ঞানিকদের তড়িৎ বিশ্লেষণ পদ্ধতির সাহায্য নিতে হবে। সাধারণত পৃথিবীতে এই ইলেকট্রোলাইসিস পদ্ধতিতে খনিজ পদার্থ থেকে ধাতু বের করার ক্ষেত্রে কাজে লাগে। সেক্ষেত্রে সহকারী উপাদান হিসেবে নির্গত হয় অক্সিজেন।
আরও পড়ুন: এই প্রথম বিজ্ঞানীরা ব্ল্যাক হোলের হার্টবিট রেকর্ড করলেন, মিলল বড় রহস্যের সমাধান!
তবে চাঁদের ক্ষেত্রে বিষয়টা আলাদা। চন্দ্রপৃষ্ঠের রেগোলিথে অক্সিজেনই প্রধান উপকরণ। আর ধাতব পদার্থ বাই-প্রোডাক্ট হিসেবে পরিচিত হয়।চাঁদের বায়ুমণ্ডল আবার অত্যন্ত পাতলা এবং এখানে অক্সিজেনের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। মূলত হাইড্রোজেন, নিয়ন এবং আর্গনের সমন্বয় দেখা যায় চাঁদের বায়ুমণ্ডলে। আর পৃথিবীতে যেরকম পাথরের মধ্যে অক্সিজেন সঞ্চিত থাকে । তেমনই চাঁদের ক্ষেত্রে রেগোলিথের মধ্যে বিভিন্ন খনিজ উপকরণের সঙ্গে মিশে থাকে অক্সিজেন। চাঁদের রেগোলিথে মূলত সিলিকা, অ্যালুমিনিয়াম এবং আয়রন ও ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড বিভিন্ন ধরনের শক্ত পাথর হিসেবে সঞ্চিত থাকে। এছাড়াও ধুলোকণা, গ্র্যাভেল এবং নুড়ি-পাথরেও আচ্ছাদিত থাকে চাঁদের পৃষ্ঠদেশ।
আরও পড়ুন: চাঁদে দুটি বড় কাঁচের গোলক কোথা থেকে এলো?কৌতূহলে বিজ্ঞানীরা
পরিসংখ্যান অনুসারে জানা গিয়েছে, চাঁদের রেগোলিথের গভীরতা হয় গড়ে ১০ মিটার। এর মধ্যে থেকে মানবজীবনে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন নিষ্কাশন করা হয়। অতি গভীরে থাকা শক্ত পাথরে সঞ্চিত অক্সিজেনকে এক্ষেত্রে গণ্য করা হয় না। গবেষণায় জানা গিয়েছে যে, চন্দ্রপৃষ্ঠের রেগোলিথের ওই ১০ মিটার গভীরতাতেই যে পরিমাণ অক্সিজেন সঞ্চিত রয়েছে তা প্রায় এক লক্ষ বছর ধরে ৮ বিলিয়ন মানুষ কাজে লাগাতে পারবেন।
ধন্যবাদ বন্ধুরা ।